খেজুরের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা - খেজুরের গুড়ের পুষ্টি উপাদান
প্রিয় গ্রাহক আপনি হয়তো
খেজুরের গুড়ের
উপকারিতা সম্পর্কে জানেন কিন্তু আপনি কি জানেন কতটুকু খেজুরের গুড়ের পুষ্টি
উপাদান রয়েছে এবং খেজুরের গুড় আপনার জন্য কতটা ক্ষতিকারক।
পোস্ট সূচীপত্রঃআজকের আর্টিকেল থেকে আপনি খেজুরের গুড় খাওয়ার উপকারিতা, খেজুরের গুড় খাওয়ার
অপকারিতা এবং খেজুরের গুড়ের পুষ্টিগুণ উপাদান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
আজকের বিষয়
- খেজুরের গুড়ের পুষ্টি উপাদান
- খেজুরের গুড়ের উপকারিতা
- খেজুরের গুড়ের অপকারিতা
খেজুরের গুড়ের পুষ্টি উপাদান
খেজুর ভিটামিন এবং মিনারেলের একটি চমৎকার উৎস। এগুলি খাদ্যতালিকাগত পটাসিয়াম,
ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন এবং তামার একটি ভাল উত্স।
100 গ্রাম খেজুরে রয়েছে-
- ভিটামিন এ: রেফারেন্স দৈনিক গ্রহণের (RDI) ৬%
- ভিটামিন B6: RDI এর ১৪%
- ভিটামিন সি: RDI এর ৩%
- ফোলেট: RDI এর ৭%
- প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড: RDI এর ৫%
- ম্যাঙ্গানিজ: RDI এর ৭%
- ক্যালোরি: ৩৮৫
এছাড়াও খেজুরে অল্প পরিমাণে অন্যান্য বি ভিটামিন, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন কে
রয়েছে।
খেজুরের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা
খেজুর গুড় হল এক প্রকার অপরিশোধিত চিনি যা নির্দিষ্ট ধরণের খেজুরের রস থেকে তৈরি
করা হয়। এটি একটি গভীর বাদামী রঙ এবং একটি মিষ্টি, গুড়ের মত গন্ধ আছে। বিশ্বের
অনেক জায়গায় খেজুরের গুড় একটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি, এবং এটি পরিশোধিত চিনির
প্রাকৃতিক বিকল্প হিসেবে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
আরো পড়ুনঃ দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত
কেসের ঘুরে আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী হলেও অনেক মানুষের ক্ষেত্রে এটি ক্ষতি
হতে পারে। খেজুরের গুড়ের উপকারী থেকে অপকারী ক্ষমতা কম হলেও খাওয়ার ভুলের কারণে
আমাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হবে। খেজুর রসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে নিম্নে
লিখিত আলোচনা করা হলো-
খেজুরের গুড়ের উপকারিতা
শীতকাল শুরু হতে না হতে সকলের ইচ্ছা হল খেজুরের গুড় খাওয়া। খেজুর গুড়ের অনেক
সম্ভাব্য স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে, কারণ এটি ভিটামিন, খনিজ এবং
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সমৃদ্ধ উৎস। খেজুরের গুড় শক্তির মাত্রা বাড়াতে, হজমের
উন্নতি করতে এবং এমনকি কিছু রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। খেজুর গুড়ের কিছু
উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হল-
- নিয়মিত খেজুরের গুড় খেলে আপনার দেহের দীর্ঘক্ষণ শক্তি বজায় থাকবে
- প্রতিদিন নিয়মিত গুড় খেলে আপনার খাবার দ্রুত হজম হয়ে যাবে এবং বদহজমজনিত সমস্যা দূর হবে
- খেজুরের গুড়ের মধ্যে থাকা ঔষধি উপাদান গুলো মাইগ্রেনের সমস্যা কে অনেকটাই কমিয়ে দেবে
- শীতকালে হওয়া বিভিন্ন সমস্যা যেমন- শুকনো কাশি, ঠান্ডা লেগে যাওয়া, অ্যাজমা প্রতিরোধে খেজুরের গুড় দারুন কাজ করে থাকে। এছাড়াও জমে থাকা কফকে এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের পথকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে
- পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খেজুরের গুড় শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখে এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে পানির প্রবাহ ঠিকঠাক রাখে এবং এর পাশাপাশি এগুলো খাওয়ার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে
- খেজুরের গুড়ের মধ্যেও অনেক পরিমাণে প্রয়োজনে পুষ্টিগুণ উপাদান আছে। খেজুরের গুড়ে থাকা আয়রন শরীরের হিমোগ্লোবিনের মাত্রাকে ঠিকঠাক রাখে এবং রক্তশূন্যতা দূর করে
- মেয়েদের পিরিয়ডকালীন চলা পেটের ব্যাথা দূর করার জন্য খেজুরের গুড় ভালো কার্যকর
- শরীরের মধ্যে থেকে টক্সিন বের করে শরীরকে সুস্থ রাখতে খেজুরের গুড় খুব কার্যকর
- খেজুর গুড় শীতকালে শরীরকে গরম রাখতে অনেক সাহায্য করে। ফলে খেজুরের গুড় যদি নিয়মিত সেবন করেন তাহলে যে কোন আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে আপনাকে লড়াই করতে সাহায্য করবে
- খেজুরের গুড়ে থাকা কার্বোহাইড্রেট রক্তের সাথে খুব দ্রুত মিশে যেতে পারে আবার রক্তে বেশিক্ষণ থাকতে পারে। সেজন্য হঠাৎ করে গ্লুকোজ কমে যাওয়ার ভয়ে একদমই থাকেনা
খেজুরের গুড়ের অপকারিতা
খেজুরের গুড়ে অনেক গুণগত মান ও বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে আপনার শরীরের
জন্য গুড় অনেক ক্ষতিকারক হতে পারে। এটি খাবারের স্বাদবর্ধক কিন্তু গুড়ের মধ্যে
অনেক উপাদান রয়েছে যেগুলো কিছু কিছু মানুষের জন্য ক্ষতিকারক হয়ে থাকে। যেমন-
খেজুর গুড় হল এক প্রকার অপরিশোধিত চিনি যা খেজুরের রস থেকে তৈরি হয়। এটি একটি
মিষ্টি হিসাবে এবং একটি লোক ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। খেজুর গুড় আয়রন,
ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন এ এবং সি এর মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টির উৎস।
খেজুরের গুড়ে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে এবং দাঁতের ক্ষয় হতে পারে। এটি ওজন বৃদ্ধি
এবং রক্তে শর্করার সমস্যাও হতে পারে।
খেজুরের গুড় বেশি পরিমাণে খাওয়া হলে তা ক্ষতিকর হতে পারে। এটি হজমের সমস্যা
সৃষ্টি করতে পারে, যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়া। অত্যধিক খেজুরের গুড় খেলে
লিভার এবং কিডনির ক্ষতি হতে পারে।
খেজুরের গুড় খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে এর উচ্চ পুষ্টিগুণ
এবং হজমের সমস্যায় সাহায্য করার ক্ষমতা।
যাইহোক, খেজুর গুড় খাওয়ার সাথে যুক্ত কিছু সম্ভাব্য ঝুঁকিও রয়েছে। এই
ঝুঁকিগুলির মধ্যে রয়েছে
দাঁতের ক্ষয় এবং গহ্বরের বর্ধিত ঝুঁকি, সেইসাথে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি। অতএব,
আপনার খাদ্যতালিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত করবেন কিনা তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে
খেজুরের গুড় খাওয়ার সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক এর মন্তব্য
প্রিয় গ্রাহক আজকের আর্টিকেল থেকে খেজুরের গুড়ের বিভিন্ন গুনাগুন এবং উপকারিতা
ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। খেজুরের গুড়ের উপকারিতা অনেক। কিন্তু
খেজুরের গুড় কিছু কিছু মানুষের জন্য ক্ষতি ডেকে আনে। এর জন্য খেজুরের গুড়
খাওয়ার আগে অবশ্যই নিয়ম মেনে খেতে হবে।
আজকের বিষয়গুলো থেকে যদি আপনি বুঝতে না পারেন বা কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে
অবশ্যই আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন। আর আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করে রাখুন যেন পরের
আর্টিকেল পাবলিশের সাথে সাথে আপনার কাছে নোটিফিকেশন যায়। আমাদের সাথে থাকার জন্য
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
A2Z ফিউচারে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url