গুরুত্বপূর্ণ ১২টি দোয়া সমূহ - কোন সূরা পড়লে বিপদ দূর হয়

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় গ্রাহক আজকে এই আর্টিকেল থেকে আপনি জানতে পারবেন গুরুত্বপূর্ণ ১২টি দোয়া সমূহ এবং কোন দোয়া পড়লে বিপদ দূর হয়, এছাড়াও জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি লাভের দোয়া।
গুরুত্বপূর্ণ ১২টি দোয়া সমূহ - কোন সূরা পড়লে বিপদ দূর হয়
পোস্ট সূচিপত্রঃ  

গুরুত্বপূর্ণ ১২টি দোয়া সমূহ

শ্রেষ্ঠ ১২ টি দোয়া যে দোয়া গুলো আপনার জীবনের গুনাহ খাতা মাফ করে দিতে পারে। চলুন তাহলে জেনে নিন সেই ১২টি দোয়া-
  • প্রথম দোয়াঃ ১০০বার সুবহানাল্লাহ পাঠ করেন তাহলে আপনার আমলনামায় ১০০০ সাওয়াব লেখা হয় এবং আল্লাহ তায়ালা ১০০০ গুনাহ মাফ করেন। [সহীহ মুসলিম- ৪/২০৭৩]
  • দ্বিতীয় দোয়াঃ আলহামদুলিল্লাহ এই দোয়াটি মিজানের পাল্লা ভারী করে দেয় এবং সর্ব শ্রেষ্ঠ দোয়া। [ তিরমিযী- ৫/৪৬২, ইবনে মাযাহ- ২/১২৪৯, হাকিম- ১/৫০৩, সহীহ আল জামে- ১/৩৬২]
  • তৃতীয় দোয়াঃ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ সর্বোত্তম জিকির। [ তিরমিয়ী- ৫/৪৬২, ইবনে মায়াহ- ২/১২৪৯, হাকিম- ১/৫০৩, সহীহ আলজামে- ১/৩৬২]
  • চতুর্থ দোয়াঃ সুবহান আল্লাহ ওয়াল হামদুলিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার এ কালেমাগুলি আল্লাহর কাছে অনেক প্রিয় এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- পৃথিবীর সকল জিনিসের চাইতে আমার কাছে অনেক প্রিয়। [ সহীহ মুসলিম- ৩/১৬৮৫, ৪/২০৭২]
  • পঞ্চম দোয়াঃ প্রতিদিন ১০০ বার কোন ব্যক্তি সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী এই দোয়াটি পাঠ করে তাহলে তার সাগর পরিমাণ গুনাহ থাকলেও আল্লাহ তাআলা তার গুনাহ মাফ করে দেবে। [ সহীহ আল বুখারী- ৭/১৬৮, সহীহ মুসলিম- ৪/২০৭১,]
  • ষষ্ঠ দোয়াঃ প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, সুবহানাল্লাহি ওয়াবি হামদিহী সুবহানাল্লিল আযীম। এই কালিমাগুলো অনেক সহজে উচ্চারণ করা যায় এবং মীযানের পাল্লায় ভারী ও দয়াময় আল্লাহর কাছে অনেক প্রিয়।[ সহীহ আল বুখারী- ৭/১৬৮, সহীহ মুসলিম- ৪/২০৭২]
  • সপ্তম দোয়াঃ কোন ব্যক্তি যদি সুবহানাল্লাহিল আযীমি ওয়াবি হামদিহী এর দোয়াটি পড়ে তাহলে প্রতিবার পড়ার জন্য একটি করে জান্নাতে খেজুরের গাছ রোপন করা হবে। [ আত তিরমিযী- ৫/৫১১, আল হাকীম- ১/৫০১, সহীহ আল জামে- ৫/৫৩১, সহীহ আত-তিরমিজী- ৩/১৬০]
  • অষ্টম দোয়াঃ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ এই দোয়ার মানে হলো জান্নাতের গুপ্তধন সমূহের মধ্যে জান্নাতের একটি গুপ্তধন। [ সহীহ আল- বুখারী- ১১/২১৩, সহীহ মুসলিম- ৪/২০৭৬,]
  • নবম দেয়াঃ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, সুবহান আল্লাহ ওয়াল হামদুলিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ। এক কালেমা গুলো হলো” অবশিষ্ট নেক আমলসমূহ। [ আহমাদ (সহীহ)- ৫১৩, মাজমাউজ জাওয়াঈদ- ১/২৯৭]
  • দশম দোয়াঃ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দুরুদ পাঠ করলে আল্লাহ তা'আলা তার প্রতি 10 বার রহমত বর্ষণ করবেন। আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিঁওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন্ কামা সাল্লায়তা আলা ইব্রাহীম ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম ইন্নাকা হামীদুম মাজিদ আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিঁওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন্ কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজিদ এবং নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আরো বলেন, যে ব্যাক্তি আমার প্রতি সকালে ১০ বার এবং বিকালে ১০ বার দুরুদ পাঠ করবে সে ব্যাক্তি কিয়ামতের দিন আমার শাফায়াত পাবে। [ তাবারানী, মাজময়াউজ জাওয়াঈদ- ১০/১২০, সহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব- ১/২৭৩]

কোন সূরা পড়লে বিপদ দূর হয়

কোন ব্যক্তি যদি বিপদে পড়ে তাহলে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যে দোয়া তিনটি শিখিয়ে দিয়েছেন সেগুলো হলো-
  • প্রথম দোয়াঃ সাদ ইবনে আবি ওক্কাস (রাঃ) বলেন, লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন। (দোয়া ইউনূস)
অর্থঃ একমাত্র তুমি ছাড়া কোন মাবুদ নেই। তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। নিশ্চয়ই আমি সীমালংঘনকারী। ( তিরমিজি: ৩৫০০)

  • দ্বিতীয় দোয়াঃ আসমা বিনতে ওমাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, আমি কি তোমাদের এমন কিছু শিখিয়ে দেব না যা তুমি নিশ্চিন্তা ও পেরেশানির মধ্য পড়বে। সাহাবী তখন বললেন, অবশ্যই শিখাবেন। নবীজি বললেন, দোয়াটি হচ্ছে “আল্লাহু আল্লাহ রব্বী লা উশরিকু বিহি শাইয়ান”
অর্থঃ আল্লাহই আল্লাহ আমার প্রতিপালক। আমি তার সঙ্গে কোনো কিছু শরিক করি না। (আবু দাউদ: ১৫২৫)

  • তৃতীয় দোয়াঃ আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সাঃ) বলেন, ”আল্লাহুম্মা লা সাহলা ইল্লা মা জায়ালতাহু সাহলান,ওআনতা তাজআলুল হুযনা সাহলান ইযা শিইতা”।
অর্থঃ ইয়া আল্লাহ, কোন বিষয় সহজ নয়। হ্যাঁ, যাকে তুমি সহজ করে দাও। যখন তুমি চাও তখন তুমি মুশকিলকে সহজ করে দাও।

( ইবনে হিব্বান: ৯৭৪) আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহান আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা কালে বহু বিপদের সম্মুখীন হয়েছিলেন। 

বেশ কয়েকবার কাফেরদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছিল। অনেক জুলুম, অন্যায়, অত্যাচার পাড়ি দিয়ে তিনি ইসলাম প্রতিষ্ঠান করেছেন। 

বিপদের সময় মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এই তিনটি দোয়া পাঠ করতেন এবং উম্মতকে পাঠ করতে বলতেন।

জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি লাভের দোয়া

”আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসবাহ্ (আমসাইতু) উশহিদুকা ওয়া উশহিদু হামালাতা 'আরশিকা ওয়া মালা-ইকাতিকা ওয়া জামী'আ খালক্কিকা, আন্নাকা আনতাল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা আনতা ওয়াহ্দাকা লা শারীকা লাকা, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আব্দুকা ওয়া রাসূলুকা’’
হে আল্লাহ! আমি সকালে (বিকালে) উপনীত হয়েছি। আপনাকে আমি সাক্ষী রাখছি, আরও সাক্ষী রাখছি আপনার 'আরশ বহনকারীদেরকে, আপনার ফেরেশতাগণকে ও আপনার সকল সৃষ্টিকে, (এর উপর) যে- নিশ্চয় আপনিই আল্লাহ, একমাত্র আপনি ছাড়া আর কোন হক্ক ইলাহ নেই, আপনার কোনো শরীক নেই; আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনার বান্দা ও রাসূল।

কোন ব্যক্তি যদি এই দোয়াটি সকালে বা বিকেলে চারবার বললে, আল্লাহ তা'আলা তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত করবেন।
(আবু দাউদ ৪/৩১৭, নং ৫০৭১; বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ, নং ১২০১; নাসাঈ, 'আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ, নং ৯; ইবনুস সুন্নী, নং ৭০)

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় গ্রাহক আশা করি আজকে আর্টিকেল থেকে গুরুত্বপূর্ণ দোয়া বা আমল সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এ দোয়া ও আমল গুলো বেশি বেশি করে পড়বেন এবং অবশ্যই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বেন। আল্লাহতায়ালা যেন সকলের গুনাহ মাফ করে দেয়। (আমীন)

এই আর্টিকেল থেকে যদি কোন কিছু বুঝতে সমস্যা হয়ে থাকে বা কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে ভুলবেন না। আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করে রাখুন এমন নিত্য নতুন আর্টিকেল পড়ার জন্য। আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

A2Z ফিউচারে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url