ফরজ গোসলের নিয়ম ও দোয়া - ৫ ওয়াক্ত নামাজ মোট কত রাকাত ফরজ
আপনি কি ফরজ গোসলের নিয়ম ও দোয়া সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। এছাড়া আপনি কি জানেন ৫ ওয়াক্ত নামাজ মোট কত রাকাত ফরজ রয়েছে। এই পোস্ট থেকে ফরজ গোসল সম্পর্কিত সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে জানতে পারবেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ফরজ গোসলের নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জানিনা। গোসলের উদ্দেশ পবিত্রতা অর্জন করা। ফরজ গোসল সম্পর্কে অনেকে জেনেও আমরা ভুল করে থাকি। কিভাবে ফরজ গোসল করতে হবে বা ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই পোস্টটি পুরোটা পড়ুন।
ভূমিকা
ইসলামের শরীয়তে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে পবিত্র পানি দ্বারা সমস্ত শরীর ধোঁয়াকে গোসল বলা হয়। ফরজ গোসল সকল মুসলিম উম্মাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফরজ গোসল কিভাবে করতে হয় বা কি প্রক্রিয়াকরায় ফরজ গোসল করলে ইসলামিক শরীয়ত মত হবে। এটা আমরা অনেকে জানিনা। ফলে না জেনে আমরা অনেকে ফরজ গোসল করতে ভুল করে থাকি। এই পোস্ট থেকে আপনি ফরজ গোসল সম্পর্কিত সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে পারবেন। এছাড়া বিশেষ করে জানতে পারবেন ফরজ নামাজের পর নবীজির আমল।
ফরজ গোসলের নিয়ম ও দোয়া
ফরজ গোসল সকল মুমিনদের জন্য কর্তব্য। ফরজ গোসল করার নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। অনেকে ফরজ গোসল করার নির্দিষ্ট নিয়ম সম্পর্কে জানেনা। এছাড়া ফরজ গোসল করার পাশাপাশি ফরজ গোসলের জন্য দোয়া রয়েছে। ফরজ গোসল করার প্রথমে অবশ্যই আপনাকে তিনটি কাজ করে নিতে হবে। (১) কুলি করে নেওয়া, (২) নাকে পানি দেওয়া, (৩) পুরো শরীরটাকে ধৌত করা। চলুন জেনে নেওয়া যাক ফরজ গোসলের নিয়ম ও দোয়া।
নিয়মঃ
- প্রথমে বাথরুমে গিয়ে আপনার যে জায়গা না পাক লেগেছে ওখানে ভাল ভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
- এবার আপনি যেভাবে নামাজের সময় ওযু করে থাকেন। একইভাবে আপনাকে অজু করে নিতে হবে শুধুমাত্র পা ধোয়া বাদ দিতে হবে।
- অজু করা শেষ হলে এবার আপনাকে গোসল করে নিতে হবে।
- গোসল করা শেষে আপনার যে পা ধোয়া বাকি ছিল, এবার টাখনু পর্যন্ত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলবেন।
এছাড়া আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, আপনার প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পানি পোছানোর চেষ্টা করতে হবে। এই সকল নিয়মাবলী মেনে আপনি ফরজ গোসল ইসলামিক অনুযায়ী করতে পারবেন।
দোয়াঃ নাওয়াইতুয়ান গোছলা লিরাফিল জানাবা-তি
অর্থঃ আমি নাপাকি থেকে পাক হওয়ার জন্য গোসল করছি।
পুরুষের ফরজ গোসলের নিয়ম
ফরজ গোসলের নিয়ম না জানলে জেনে নিন
- প্রথমে নাপাক যুক্ত স্থান ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে
- এবার অজু করতে হবে
- মাথা থেকে পা পর্যন্ত পানি দিয়ে ধৌত করতে হবে
ক্বজচবকতজহহকতহজতকতক
নারীর ফরজ গোসলের নিয়ম
নারীদের ফরজ গোসলের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
- ফরজ গোসল করার আগে দুই হাত ধৌত করে নিতে হবে
- লজ্জাস্থান বাম হাত দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে
- সুন্দর করে অজু করতে হবে
- মাথা থেকে পা পর্যন্ত পানি দিয়ে ধৌত করতে হবে
- শেষে পায়ের টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে ফেলতে হবে
স্বামী স্ত্রীর ফরজ গোসলের দোয়া
দোয়াঃ নাওয়াইতুয়ান গোছলা লিরাফিল জানাবা-তি
অর্থঃ আমি নাপাকি থেকে পাক হওয়ার জন্য গোসল করছি।
সাধারণ গোসলের দোয়া
শরীরের ময়লা দূর করার জন্য এবং স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের গোসল করা কর্তব্য। ইসলামের শর্তে গ্রহণ করে একটি ফরজ কাজ। গোসলের সাধনার দোয়া সম্পর্কে জানা যাক
- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা জান্নাহ আউজুবিকা মিনান্নার
৫ ওয়াক্ত নামাজ মোট কত রাকাত ফরজ
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মোট ১৩ টি ফরজ রয়েছে। আর ১৩ টি ফরজ মূলত নামাজের ভেতরে সাতটি ফরজ এবং নামাজের বাহিরে ছয়টি ফরজ। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফরজ
নামাজের বাহিরে
- শরীর পাক
- কাপড় পাক
- নামাজের জায়গা পাক
- ছতর ঢাকা
- কেবলামুখী হওয়া
- ওয়াক্ত মত নামাজ পড়া
- নামাজের নিয়ত করা
নামাজের মধ্যে
- তাকবীরে তাহরীমা বলা
- দাঁড়ায় নামাজ পড়া
- কেরাত পড়া
- রুকু করা
- দুই সিজদা করা
- আখেরি বৈঠক করা
ওযুর ফরজ কয়টি ও কি কি
আমরা সকলেই অজু করে থাকি। এই অজু হতে পারে গোসলের আগে বা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার আগে। অজুর ফরজ মূলত চারটি। যথা-
- সমস্ত মুখ ধোয়া
- জান ও বাম হাতে কোনইসহ হওয়া
- মাথা মাসেহ করা
- দুই পায়ের কোনো শহর ধোয়া
গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি
আমরা সকলে গোসল করে থাকি কিন্তু আমরা কি জানি যে গোসলের তিনটি ফরজ রয়েছে। চললাম জেনে নেবে গোসলের তিনটি ফরজ
- কুলি করা
- নাকে পানিয়ে দেওয়া
- সমস্ত শরীর ভালোভাবে ধৌত করা
ফরজ নামাজের পর নবীজির আমল
ফরজ নামাজের পরে অনেক দোয়া রয়েছে, যেগুলো আমরা পড়ে থাকি। কিন্তু আপনি কি জানেন নবী যে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)ফরজ নামাজের পর কি আমল করতেন। সহি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যে দোয়াগুলো বা আমল গুলো করেছেন সেগুলো হল-
সালাম ফেরানোর সঙ্গে সঙ্গে বলতেন আল্লাহু আকবার, আস্তাগফিরুল্লাহ তিনবার পাঠ করতেন
اَللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلَامُ تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ
আল্লাহুম্মা আনতা সালাম ওয়ামিং কাসসালাম তাবারকতা ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম
لاَ إِلَهَ إلا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালা হুল হামদু ওয়াহুয়াল কুল্লি শাঈং কাদির
অর্থঃ একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, তাঁর কোন শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসা তাঁরই এবং তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
اللَّهُمَّ أَعِنِّي على ذكرك وشكرك ، وَحُسْنِ عِبادتك
(আল্লা-হুম্মা আ'ইন্নি আলা যিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ইবাদাতিকা)
অর্থ- হে আল্লাহ! আমাদেরকে সাহায্য কর তোমার যিকির করতে, তোমার কৃতজ্ঞতা আদায় করতে এবং সুন্দরভাবে তোমার ইবাদত করতে। (মুসনাদে আহমাদ ৭৭৮৩)
سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ العَظِيمِ
সুবাহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম
لا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إلا بالله
লা-হাউলা ওয়ালা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ্
অর্থ: আল্লাহর প্রেরণা দান ছাড়া পাপ থেকে ফিরার এবং সৎ কাজ করার শক্তি নেই
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمَ وَالْحَزَنِ، وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ، وَضَلَعِ الدَّيْنِ، وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ
আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ'উযুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি ওয়াল আজযি ওয়াল কাসালি ওয়াল জুবনি
ওয়াল বুখলি ওয়া জ্বলা'ইদ দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।
অর্থঃ হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই- দুশ্চিন্তা, পেরেশানী, অক্ষমতা, অলসতা, পাপুরুষতা, কৃপণতা, ক্ষণভার ও মানুষের প্রভাবাধীন হওয়া থেকে।
اللهم لا مانع لما أعطيت ولا مُعْطِي لما منعت وَلَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدَ مِنْكَ الْجَدُّ
আল্লাহু-হুম্মা লা মা-নিয়া লিমা আ'ত্বাইতা, ওয়ালা মু'তিয়া লিমা মানা'তা ওয়ালা ইয়ানফাউ ( যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দু)
অর্থ- যে অভ্যস্থ। তুমি যা দান কর তা গ্রোধ করার এবং যা রোধ কর তা দান করার সাধ্য কারো নেই। আর ধনবানের ধন তোমার আযাব থেকে মুক্তি পেতে কোন উপকারে আসবে না
اللهُ لا إلهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومَ : لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوا
لَهُ مَا فِي السَّمَوتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ
عِنْدَهُ إِلا بِإِذْنِهِ ، يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ
وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ
السَّمَوتِ وَالْأَرْضَ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيم
আল্লাহু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম। লা তা'খুযুহু সিনাতু ওয়ালা নাউম। লাহু মা ফিস্ সামা-ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্বি। মান যাল্লাযী ইয়াশফাউ' ই'ন্দাহু ইল্লা বিইজনিহি। ইয়া'লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম, ওয়ালা ইউহিতুনা বিশাইয়্যিম্ মিন 'ইলমিহি ইল্লা বিমা শা-আ' ওয়াসিআ' কুরসিইয়্যুহুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি, ওয়ালা ইয়াউ'দুহু হিফযুহুমা ওয়া হুওয়াল 'আলিইয়্যুল আ'জিম।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় গ্রাহক আজকে আর্টিকেল থেকে আপনি ফরজ গোসল নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এছাড়া আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যেমন ফরজ নামাজের পর নবীজি কোন আমল গুলো করতেন।
আপনার যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন। আর অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো না করলে এখনই ফলো করে দিন। আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
A2Z ফিউচারে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url